কক্সবাজার, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

‘বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসব কাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। ৫২ বছরের বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশ্বে রোল মডেল। চলমান এই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান কক্সবাজারে। জানা যায়, কক্সবাজার জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৭৭টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। এতে ব্যয় হচ্ছে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি।

এর মধ্যে, সাগরছোঁয়া রানওয়ে, মুক্তার রঙে ঝিনুকের মতো রেলস্টেশন, গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ, জেলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) বদলে যাওয়া কক্সবাজারের এসব সাফল্য তুলে ধরে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসব। যেখানে তুলে ধরা হবে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের ইতিহাস। গণভবন থেকে জমকালো উৎসবটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সৈকতের অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগের তত্ত্বাবধানে উৎসব বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন। উৎসবে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। এর বাইরে বেড়াতে আসা পর্যটকরা তো রয়েছেনই। নানা রকম সাজসজ্জা ও মঞ্চ প্রস্তুত হয়েছে সাগর তীরে। অনুষ্ঠানস্থলে চারটি স্টল বসানো হবে। যেখানে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রী ও কক্সবাজারের সামগ্রিক উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন প্রেরিত অনুষ্ঠানমালার সূচিতে এই উৎসবকে দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্ব অনুষ্ঠান সকাল ১০টায় শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে চলবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, স্বাগত বক্তব্য, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বিষয়ে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন।

সকাল সাড়ে ১০টায় কবিতা আবৃতি করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা। এরপর স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় দেশাত্মবোধক গান ও পল্লী সঙ্গীত, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে স্কুল শিক্ষার্থীদের সংলাপ, স্কুল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

পরে স্কুল পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। বেলা পৌনে ১টায় স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। অতিথিদের আগমনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এরপর রয়েছে স্থানীয় শিশু শিল্পীদের অংশগ্রহণে সমবেত জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের স্বাগত বক্তব্যের পর ‘জোরসে চলো বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে।

এরপর সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে স্থানীয় উন্নয়নের ওপর উপস্থাপনা হবে। এতে বক্তব্য রাখবেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব ডা. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় উন্নয়নের সুবিধাভোগীদের বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানের সভাপতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বক্তব্য রাখবেন।

সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে ‘ও জোনাকি’ গানের ভিডিও চিত্র চিত্রায়ন করা হবে। এরপর ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ গানের সাথে দলীয় নৃত্য ও সৈকতের আকাশ রাঙানো হবে হরেক রঙের আতশবাজিতে। সবশেষে মঞ্চ মাতাবেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস ও চিরকুট।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, ‘সমুদ্র সৈকতে যেহেতু উৎসবটি হচ্ছে এতে অনেক পর্যটকের সমাগম হবে। এ জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বীচ কর্মী মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি পর্যটন স্পটগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হবে।’

পাঠকের মতামত: